প্রয়োজনীয় তথ্য সমূহ

  • My Observations
  • রোগসমুহ

Sunday, June 4, 2017

স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্য এবং প্রান্তিক পর্য্যায়ে কর্মরত স্বাস্থ্য বিভাগীয় কর্মীদের জবাবদিহিতা।

Saturday, January 16, 2016

সবিনয় নিবেদন...

এক নাগারে অনেকগুলো দিন আমার পক্ষে ব্লগ নিয়ে বসা আর প্রতিশ্রুত লেখাগুলো লেখা হয়ে উঠে নাই, এর কারন পেশাজীবীর বাইরে একজন সামাজিক মানুষ আর চাকুরীজীবী হউয়ার কারণে সৃষ্ট কিছু সমস্যা। সুখের বিষয় হচ্ছে এই ব্লগ এবং এর বিষয়বস্তু নিয়ে কয়েকজন পাঠক মন্তব্য করেছেন এবং কিছু প্রশ্ন ও রেখেছেন,  দুখের বিষয় হচ্ছে আমি এইগুলো বিষয়ে যথাসময়ে উত্তর দিতে পারি নাই। কথা ছিল প্রান্তিক পর্য্যায়ে চিকিৎসা পরামর্শ প্রদানকারীদের পরামর্শের কারণে কিছু চিকিৎসা বিভ্রাটের শিকার হচ্ছে কতিপয় ডাউবেটিস রোগী, ব্লাড প্রেসারের রোগী, হার্টের রোগী, বাতের রোগী। শ্বাসকষ্টের রোগী, বাতের রোগী, নিউরোলজিক্যাল রোগী, পেট ব্যাথার রোগী এবং মানসিক ব্যাধি আক্রান্ত রোগী। কথা ছিল লেখার, শরীরের কোন কোন উপসর্গের জন্য ঘরে ডাক্তার ঢাকার জন্য বাঁ আন্দাজে অপেক্ষা করার ছেয়ে দ্রুত হাস্পাতালে যাওয়া উচিৎ সেগুলো বিষয়ে নিজের অভিজ্ঞতা সমুহ। আশাকরি এই দুটা বিষয়ে লেখা শুরু করবো। এই ব্লগে প্রতিটি লেখা সাধারন জনগৌষ্টির স্বাস্থ্য সেবার প্রয়োজন বোধ হতে উৎসারিত ব্যক্তি উদ্যোগে জানানোর চেষ্টায়। সুতরাং এতে কারো অনুভুতিতে আঘাৎ এর ব্যাপার থাকলে জানালে খুবই বাধিত থাকব। ...।
ডাঃ অজয় ঘোষ, উপ-পরিচালক।অডিট, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মহাখালী, ঢাকা-১২১২

Friday, November 28, 2014

শীতের সময়ে সাধারণত লোকজন আপেক্ষিক ভাবে সুস্ত থাকে। শারীরিক এই এই আপেক্ষিক সুস্থতা লোকজনকে মানসিকভাবে ও সুস্থ
রাখে। 

Wednesday, August 20, 2014

সুচনা বক্তব্য

প্রারম্ভিক কিছু আলোচনা
          আমার ৩০ বছরের চিকিৎসা পেশাগত জীবনে চাকুরির সুবাধে প্রত্যন্ত পাহাড়ী গ্রাম অঞ্চলের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র  থেকে শুরু করে  শহরের রেফারেল হাসপাতালে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। সুযোগ হয়েছে বিভিন্ন প্রাইমারী এবং সেকেন্ডারী লেভেলের রেফারেল হাসপাতালের  বহিবিভাগের রোগী দেখার এবং চিকিৎসা পরামর্শ দেয়ার, অন্তঃবিভাগে স্বাধীন ভাবে চিকিৎসা দেয়ার, প্রশাসনিক পদে থেকে সরকারী স্বাস্থ্য কর্মকান্ডের ব্যবস্থাপনা, মনিটরিং এবং মূল্যয়িনের এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন গবেষনা কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত থাকার। প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্য্যার ১৯৭৮সালের আলমা আতা ঘোষনার সাথে সামন্জস্য রেখে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার যে সিস্টেম গড়ে উঠেছে এবং কার্যকর আছে আমার এই পেশাগত চাকুরী জীবনে তা সিস্টেমেটিক আমার মতো পর্যবেক্ষনের চেষ্টা করেছি। এই পর্য্যবেক্ষনে যে বিষয়গুলো আমার মাঝে এই বই লেখার প্রয়োজনিয়তা বোধ সৃষ্টি করেছে সেগুলো হলো ..

01.        আমাদের প্রাথমিক স্থর থেকে টারসিয়ারি স্থর পর্যন্ত হাসপাতালগুলোতে যে মৃত্যুগুলো এখনো হয় তার তিন-চতুর্থাংশ মৃত্যু পরিহার করা যায় এরুপ কতগুলো কারনে যেমন ম্যালেরিয়া, নিউমোনিয়া (এআরআই), ডায়রিয়া, পোড়া, পয়জনিং এবং হাপানি বা শ্বাসকষ্ট।
02.       আবার হাসপাতালের বহিঃবিভাগ গুলোতে রোগীরা যে সকল অসুবিধার চিকিৎসার জন্য আসে তাদের অধীকাংশই সৃষ্টি হয় কিন্তু প্রতিরোধ যোগ্য কিছুু কারনে।
03.       অন্যদিকে আবার হাসপাতালে যে রোগীগুলো মারা যায় তার চার পঞ্চমাংশই কিন্তু ভর্তির দিন বা পরবর্তি দিনেই মারা যায়.
04.        দুই তৃতিয়াংশ রোগী হাসপাতালে আসার আগে কিছু না কিছু  চিকিৎসা পায় বাইরে থেকে, যারা কিছু না কিছু চিকিৎসা পরামর্শ পেয়ে আসে বা ঔষূধ খেয়ে আসে।
05.        আবার তাদেও মধ্যে তিন চতুথাংশ গ্রাম পর্য্যায়ের বিভিন্ন স্থরের চিকিৎসা পরামর্শকারীগন  থেকে নিয়ে থাকেন
06.       যাদের প্রকৃতপক্ষে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাতো দুরের কথা, সাধারন শিক্ষাগত যোগ্যতা ও কিন্তু অনেকের আবার মাধ্যমিকের নিচে।
07.        এই চিকিৎসা পরামর্শ দানকারীদের দুই তৃতিয়াংশেরই মানুষের দেহের গঠন, তথা বিভিন্ন রোগের কোন স্বচ্চ ধারনা দুরে থাক শরীরের কোথায় কি আছে, এবং কোন অংগের কি কাজ এবং তা কিভাবে হয় তার কোন জ্ঞানই নাই।
08.       আবার লক্ষনীয হলো কোন্ লক্ষনের কথা রোগী কোন্ তন্ত্রের অসুস্থতায় বলতে পারে তার সামান্যতম জ্ঞান তাহাদের অনেকের আছে বলে আমার মনে হয়নি। তাদের এক্ষেত্রে অনেকেরই রোগী সুস্থ করে তোলার ইচ্ছার ছেয়ে আর্থিক লাভটাই বেশী বিবেচ্য থাকে।
09.        বিধায় বেশীরভাগ ক্ষেত্রে মুখ-ব্যাতিত পথেই (আই-ভি এবং আইএম ইন্জ) এদের ঔষধ প্রয়েগের প্রবনতা বেশী থাকে যা অনেক সময় ঝুকিপূর্ণ থাকে বহুবিধ কারনে।
10.        এদের মধ্যে ৯০% জনেরই রোগী রেফারের ব্যাপারে কোন স্বচ্ছ ধারনা নাই ফলে অনেক ক্ষেত্রে রোগের অন্তিম সময়ে রোগী হাসপাতালে রেফার হয়ে আসে।
11.        এদের অনেকেই কিন্তু উত্তরাধিকার সূত্রেই এই পেশায় চলে আসেন কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়া।
          আমি আমার দীর্ঘ ২৪বছরের চাকুরী জীবনে এরুপ চিকিৎসা প্রদানকারীদের সাথে বিভিন্ন সময়ে প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করে বিষয় ভিত্তিক প্রশিক্ষন ছাড়াও তাদের জ্ঞানের ব্যাপারে জানার চেষ্টা করেছি।  বিভিন্ন সময়ের এই প্রশিক্ষনগুলোতে
আমি অবাক হয়েছি এটা উপলব্ধি করে যে এদের অধিকাংশই চিকিৎসা দেন সম্পুর্ন আন্দাজের উপর ভিত্তি করে। তাদের মধ্যে
·       রোগের কোন সুষ্পষ্ট জ্ঞান নাই, সেটার ছেয়ে বড় কথা তাহারা জানেন না
o      কোন্ ঔষুধ কোথায় প্রয়োগ করা যাবে না,
o      কোন্ ঔষধের মাত্রা কতো,
o      কোন ক্যপ, ট্যাব তথা ১চামুচ সিরাপে কোন ঔষূধ কি পরিমানে থাকে তার ও কোন জ্ঞান তাহাদের অনেকেরই নাই। 
·       আবার এদের ৮০% জনের ও বেশী ইংরেজী পড়তেও পারেন না যথাযতভাবে।

এর উল্টো পিঠে কি দেখা যাবে:
আমাদের জনসংখ্যার ৭৫%ভাগ গ্রামে থাকে। সতেনতার অভাব, দারিদ্র, অপুষ্টি আর যোগাযোগ ব্যবস্থার দুরবস্থার কারনে শিক্ষিত চিকিৎসক তথা চিকিৎসা ব্যবস্থা থেকে গ্রামের জনসংখ্যার বিরাট একটা অংশ অন্যভাবে অর্থাৎ এই চিকিৎসা পেতে অভ্যস্ত্য হয়ে পড়েছেন। যাই হবে হউক আমাদের গ্রামগুলোর দরিদ্র জনগন দারিদ্র্য এবং বিভিন্ন বাস্তবতার কারনে এদের কাছে শুধু যে চিকিৎসা করতে বাধ্য তা নয়, তাহাদের পরামর্শ ব্যতিত অন্য ডাক্তার বা অন্য কোন চিকিৎসা কেন্দ্রে¿ ও নিয়ে যাবে না।

হ্যাঁ, ইহাই বাস্তবতা!
প্রাথমিক স্বার্স্থ্য পরিচর্যা তথা জনস্বাস্থ্য গুরুত্বপুর্ণ রোগগুলোর চিকিৎসার  ক্ষেত্রে এই বাস্তবতার বিচারে আমি প্রাথমিকভাবে মনে করি এই চিকিৎসা পরমর্শদানকারীদের রোগ এবং রোগের চিকিৎসা সম্পৃক্ত সম্পুর্ন জ্ঞান না থাকলেও, রোগ এবং রোগীর অবস্থা সম্পর্কে কিছু স্বচ্চ ধারনা থাকা প্রয়োজন এবং তথা কখন আর নিজে চিকিৎসা না করে আরো উচ্চতর পরামর্শের (রেফারেল) জন্য পাঠানো উচিৎ বুঝতে পারার দক্ষতা বৃদ্ধি  তথা রোগী রেফারের ক্ষেত্রে যে নিদ্দিষ্টতা মেনে চলা উচিৎ, তাদের মধ্যে সে নৈতিক উপলব্ধিটা আনা প্রয়োজন। 
জনস্বাস্থ্য গুরুত্বপুর্ণ এই সকল অসুস্থতার ব্যাপারে প্রাথমিক পর্য্যায়ের চিকিৎসা প্রদানকারীদের মাঝে স্বচ্ছ ধারনার পাশাপাশি সকলের মাঝে সমরুপতা আসাও প্রয়োজন।  এই উদ্দেশে আমি বাংলায় এই বই লেখার চেষ্টা করেছি আমার নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে। আমার ধারনা শুধু অনআনুষ্ঠানিক চিকিৎসা প্রদানকারী নয়, মেডিক্যাল এসিষ্ট্যান্টগন ও এই বই থেকে তাহাদের পেশাগত পরিজ্ঞান লাভ করিতে পারিবেন,
01.     যাদের দুই তৃতিয়াংশের রোগ ও রোগের কারকতা (Pathology) নিয়ে কোন ধারাবাহিক ধারনা তো নাইই,
02.    আবার এদের কারোরই দেখা যায় রোগীর কোন সিস্টেমেটিক চিকিৎসা দেয়ার ধারনাই নাই।
03.   আবার কোন্ কোন্ রোগের কি প্যাথলজীক্যাল পরীক্ষা, চিকিৎসা বিবেচনাই কি কি অগ্রাধিকারে নিয়ে বিবেচনা করিতে হবে তার ও ধারনা নাই।
04.     একটা ঔষধ প্রয়োগ করার পর শরীরের কি কি পরিবর্তন হতে পারে তার সামান্যতম ধারনা নাই  এদের অনেকেরই। 
05.    এ ছাড়া বিভিন্ন কি কি ঔষুধ একসাথে সেবন করা হলে খারাপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে তার ধারনা অনেকে রাখার প্রয়োজন ও মনে করেন না অথচ যারা স্বাধীনভাবে চিকিৎসা দেয়ার সনদপ্রাপ্ত,
06.    দূভাগ্য জনক হলেও সত্য যে দীর্ঘকালীন তথা আমৃত্যু চিকিৎসা নিতে হবে এরুপ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ পাওয়া রোগীরা চিকিৎসা বিভ্রাটের শীকার হচ্চে প্রতিনিয়ত এদের স্বচ্ছ জ্ঞানাভাবের কারনে, এ রোগীগুলোর মধ্যে উল্লেখ্য ব্লাড প্রেসারের রোগী, ডায়বেটিসের রোগী, হাপানীর রোগী, হার্টের ভাল্বের জটিলতার রোগী, ক্রনিক হার্ট ফেইলিউরের রোগী, বিভিন্ন প্রকার গ্রন্থি প্রদাহের রোগী, বিভিন্ন প্রকার মানসিক রোগী, লিভার ও কিডনির ক্রনিক রোগী  (এ সকল বিষয়ে রোগীরা কি কি বিভ্রাটের শিকার হচ্ছে তা পরবর্তিতে আলোচনার চেষ্টা করবো।
          একজন লোক যে আসলেই রোগী তা বোধ্যগম্যতায় আনার জন্য যে ব্যাপারগুলো জানা থাকা প্রয়োজন অবশ্যই সেগুলো হলো, যেমন (১) রোগ ও রোগীর ইতিহাস কিভাবে নিতে হবে, (২) শরীরের কোন্ কোন্ তন্ত্রের বৈকল্যের কারনে কি কি অসুবিধা হতে পারে (৩) কিভাবে উপসর্গ তথা লক্ষন বিশ্লেষন করতে হবে, কিভাবে যথাযথ শারীরিক পরীক্ষা করতে হবে, (৪) কোন্ কোন্ প্রয়োজনীয় লেবরেটরী পরীক্ষা কর্তে হবে,  যে সবের কোন যৌক্তিক জ্ঞান এদের অনেকেরই নাই।
তাই এই বইতে আমি চেষ্টা করেছি
01.     কিভাবে রোগীর ইতিহাস নিতে হবে,
02.    কোন অসুবিধা বা উপসর্গ কোন তন্ত্রের বৈকল্যে বা রোগে হতে পারে।
03.   কিভাবে রোগীর শারীরিক পরীক্ষা সম্পন্ন করিতে হবে,
04.     কিভাবে বিভিন্ন তন্ত্রের  উপসর্গ ও মুল লক্ষনগুলো বিশ্লেষন করে রোগ নির্নয়ের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
05.    একজন অসুস্থ রোগীর উপসর্গ এবং লক্ষনগুলোর কিভাবে ব্যাখ্যা করিতে হইবে,
06.    তা থেকে রোগ সম্বন্ধে কিভাবে একটা যৌক্তিক ধারনা তৈরী করিবেন এবং
07.     তার উপর নির্ভর করে রোগের কিভাবে  চিকিৎসা পরামর্শ দেয়ার ব্যবস্থা নিবেন।
08.    এ ছাড়াও জনস্বাস্থ্য গুরুত্বপুর্ন রোগগুলোতে প্রাথমিকভাবে করনীয় কি হতে পারে এবং কখন
অবশ্যই রেফার করতে হবে এবং হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে, এব্যাপারে আলোচনা করছি।

উদ্দেশ্য একটাই, অযৌক্তিক তথা ব্যাখ্যাহীন কোন চিকিৎসার কারনে কোন রোগীর যেনো চিকিৎসা বিভ্রাট না হয় এবং এবং একটা রোগী হলেও যেন নিশ্চিৎ অকারন মৃত্যু হতে রক্ষা পায়। কোন পেশাজীবি শ্রেনীকে খাটো করে দেখানোর উদ্দেশ্যেই আমার এই আলাপ নয় বরং ভুলগুলো উপলব্ধি করে ভবিষ্যতে না হওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে পারবেন সবাই এই নিমিত্তেই আমার এই আলোচনা।

ডাঃ অজয় ঘোষ,
কক্সবাজার।