হাপানী/ব্রংকিয়াল
এস্থমা: ব্যবস্থাপনার
সাংকেতিক নির্দেশিকা
হাপানী বা ব্রংকিয়াল এস্থমা কি?
ইহা এক ধরনের শারীরিক
অসুস্থতা যার বৈশিষ্ট্য হলো
F শ্বাসপথের কোষকলায় দীর্ঘ সময় স্থায়ী প্রদাহ ও
F শ্বাসনালীর বিভিন্ন অংশের ঝিল্লীর বৃদ্ধিপ্রাপ্ত সংবেদন শীলতা এবং
F মাঝারী
ও ক্ষুদ্র শ্বাসনালীগুলোর মসৃন মাংসপেশী সমুহের বৃদ্ধিপ্রাপ্ত সংকোচন প্রবনতা।
কিভাবে
কোন্ উপসর্গ এবং লক্ষণ সুষ্টি হয়?
বিশ্বাস
করা হয় শ্বাসনালী বা শ্বাসপথের এই
প্রদাহ জনিত কারনেই এস্থমা রোগীর সৃষ্টি হয়:-
01.
শ্বাসকষ্টের কারক অবস্থা সমূহ;
02. হুইজ বা রংকাই হওয়ার কারন
সমূহ;
03. পূনঃ পুনঃ কাঁশী সৃষ্টি হওয়ার
কারন সমূহ।
এগুলোর কারনে সৃষ্টি হয়ে থাকে নিচের উপসর্গ এবং লক্ষন গুলো; যেমন
(১) ►কফ সহ
কাঁশী:-শ্বাসনালী পরিস্কার করার কেন্দ্রিক প্রবনতা হেতু কাশীর সৃষ্টি হয়
এবং এতে আঠাঁলো সাদা* কফ বের হয়, (কাশী রাতে
বেশী হয়, কাশীর সময় গরম বোধ হয়)।
(২) ►হুইজ:-প্রশ্বাসের
সাথে সাথে বাঁশীর শব্দের মতো অগনিত শব্দ, যা সহজে শোনা যায়।
(৩) ►চেষ্ট
টাইটনেস:- বুকে চাপ অনুভব করা; যতে বুক ফুলানোর ক্ষমতা
কম অনুভব করা, (৪) ►ডিস্পনিয়া:- শ্বাসের কষ্ট অনুভব করা।
এস্থমা
রোগীর শ্বাসকষ্টের কারক অবস্থা
সমূহ
১. শ্বাসনালীর আভ্যান্তরিন
ঝিল্লি ফুলে যায় ও তা থেকে অতিরিক্ত আঠালো মিউকাস নিঃসরন হওয়া,
২. শ্বাসনালীর মসৃন মাংসেপেশী
সমূহের সংকোচন শীলতা বেড়ে যাওয়া ও
৩. উপোরক্ত কারনে শ্বাসপথে
বাতাস চলাচলে বাধা সৃষ্টি হওয়া।
এস্থমা
রোগীর হুইজ বা রংকাই হওয়ার কারন সমূহ
৪. শ্বাসনালীর মসৃন মাংসপেশী
সমুহের বৃদ্ধিপ্রাপ্ত সংবেদন শীলতা এবং সংকুচিত শ্বাসপথে বাধাপ্রাপ্ত বাতাস চলাচলের ফলে সৃষ্টি হয়
(২) হুইজ:- শীষের মতো বাঁশীর শব্দ যা
স্টেথোস্কোপ ছাড়া শোনা যায়;
(৩) রংকাই:-যা
বুক ও পিঠের উপরে স্টেথোস্কোপ এর সাহায্যে শোনা যায়।
এস্থমা
রোগীর পূনঃ পুনঃ কাঁশী সৃষ্টি হওয়ার কারন সমূহ
Ø শ্বাসনালীর আভ্যান্তরিন
ঝিল্লির অতিরিক্ত সংবেদনশীলতা ও ঐ কারনে সৃষ্ট শ্বাসনালীর আভ্যান্তরিন ঝিল্লি থেকে
অতিরিক্ত নিঃসরন (সাদা আঁঠালো কফ) পরিস্কার করার তাগিদে পূনঃপুনঃ কাঁশী সৃষ্টি হয়।
Ø ইহাছাড়াও জীবানু সংক্রমন এবং
সংকুচিত শ্বাসনালীতে বাতাস চলাচলের কারনে কাশী সৃষ্টি হয়।
উপরোক্ত
বিশ্লেষন থেকে উহা অনুমিত হওয়া স্বাভাবিক যে
ð
ব্রংকিয়াল এস্থমা রোগীর ব্যবস্থাপনায় মূল লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য হবে
► শ্বাসকষ্টের কারনে যেন রোগীর জীবন
কোন সময় ঝুকি পূর্ন না হয়;
► শ্বাসকষ্টের কারনে যেন রোগী
কর্মক্ষমতা না কমে এবং কর্মঘন্টা না হারায়;
►দীর্ঘস্থায়ী
প্রদাহের কারনে যেন রোগীর শ্বাসনালী-পথের এবং শ্বাসকলার বৈকল্য না আসে;
►রোগী
যেন স্বল্পস্থায়ী বা দীর্ঘ স্থায়ী অক্সিজেন কমতিতে না ভুগে।
ðএবং তাই মূলবিবেচ্য বিষয় হবে
Ø
’’ব্রংকিয়াল এস্থমা রোগীর’’ অবস্থার যথাযত মুল্যায়ন করে (স্কোরিং)
Ø
শ্বাসনালীর এই অতিরিক্ত
সংবেদনশীলতার যথাযত নিয়ন্ত্রন এবং কমানো ও
Ø
শ্বাসনালীর সংকোচন-শীলতা
প্রতিরোধ করে প্রসারনশীলতা বাড়ানো।
(১) ’’ব্রংকিয়াল এস্থমা রোগীর’’ অবস্থার যথাযত মুল্যায়ন? কিভাবে সম্ভব?
ব্রংকিয়াল এস্থমা রোগীর’’ অবস্থার যথাযত মুল্যায়ন করার জন্য নিচের
প্রশ্নগুলোর উত্তর জেনে নিতে হবে।
০০. প্রকৃত শ্বাস কষ্টের রোগী নাকি মানসিক শ্বাসকষ্টের রোগী (Functional
Dyspnoea)?
০১. যদি শ্বাসকষ্ট হয় তবে এই শ্বাসকষ্ট কি সব সময় থাকে ও মাঝে মাঝে
বিশেষ বিশেষ কারনে বেড়ে যায় (যেমন
হার্ট ফেইলিউর জনিত শ্বাসকষ্ট সবসময় থাকে এবং পরিশ্রমের সময় বা আহারের পর পর বেড়ে
যায়) অথবা সব সময় থাকে না কিন্তু মাঝে মাঝে বেশী শ্বাসকষ্ট হয় (ব্রংকিয়াল এস্থমা
রোগীর শ্বাস কষ্ট সবসময় বেশী থাকে না বছরের নিদ্দিষ্ট ঋতু গুলোতে তীব্রভাবে বেড়ে
যায়)।
০২. সব সময় থাকে না কিন্তু মাঝে মাঝে বেশী শ্বাসকষ্ট হয় এরুপ
শ্বাসকষ্টের রোগী হলে তবে শ্বাসের সাথে শব্দ আছে কিনা (হুইজ)? রোগীর অতিরিক্ত গরম
বোধ হয় কিনা? পুরো বুকের চাপ বা টাইট অনুভব করছে কিনা।
০৩. হুইজ হচ্চে, গরম বোধ হচ্চে এবং বুকে টাইট বোধ হচ্চে এরুপ রোগী হলে জানতে হবে রোগীর কখন
কখন এবং কদ্দুর মাত্রার শ্বাসকষ্ট হচ্চে?
আরো জানতে হবে
ক. প্রতিদিন দিনের
বেলায় শ্বাসকষ্ট হয়?
খ. রাত্রে শ্বাসকষ্ট
হয়? হলে তা একনাগারে কতদিন বা মাসে কতদিন? শ্বাসকষ্টের জন্যে ঘুমের ব্যাঘাৎ হচ্চে কিনা।
গ. রাত্রী কালিন
শ্বাসকষ্ট সকালে কতক্ষন থাকে।
ঘ. শ্বাসকষ্টের জণ্য
রোগীকে মাসে কয়বার শ্বাসকষ্ট চিকিৎসার চরম ব্যবস্থাগুলো (যেমন নেবুলাইজার, এমাইনোফাইলিন ড্রিপ, ষ্টরয়েড
ইঞ্জেকশান নিতে বা হাসপাতালে ভর্তি) নিতে হয়।
০৪. শ্বাসকষ্টের মাত্রা বুঝার জন্য রোগীর কথা বলার ক্ষমতা (একটা বাক্য শেষ করার জন্য রোগীকে
কয়বার থামতে হচ্চে), মানসিক অবস্থা (রক্তে অক্সিজেন ঘাটতি বুঝার জন্য), শ্বাসগতি
এবং নাড়ীর গতি নির্নয় করা পয়োজন।
(২)
অতিরিক্ত সংবেদনশীলতা ও প্রদাহের যথাযত নিয়ন্ত্রন? কিভাবে সম্ভব?
(ক) অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে:::
কিছু অভ্যাস
পরিবর্তনের মাধ্যমে শ্বাসনালীর এই অতিরিক্ত সংবেদনশীলতা এবং প্রদাহের তীব্রতা
কমিয়ে রাখা সম্ভব। শ্বাসনালীর এই অতিরিক্ত সংবেদনশীলতা এবং প্রদাহের তীব্রতা কমিয়ে
রাখার ব্যাপারে উপকার করতে পারে এরুপ দৈনন্দিন জীবনে পালন সম্ভব বিষয় গুলো হলো:-
F যে কোন ধরনের ধুমপানের অভ্যাস থেকে বিরত থাকা;
F ধুলোবালিযুক্ত এবং ধোঁয়াযুক্ত জায়গায় সময় না কাটানো; (প্রয়োজনে
মাস্ক ব্যবহার করা);
F তুলোর বিছানাপত্র ব্যবহার না করা, ব্যবহার করলেও যথাযত কভার দিয়ে
ব্যবহার করা;
F পারত পক্ষে ঘরে কার্পেট না রাখা । রাখলেও যথাযত পরিস্কারের ব্যবস্থা
রাখা।
(খ)
ঔষধের দ্বারা
এই
অতিরিক্ত সংবেদনশীলতা ও প্রদাহ যথাযত নিয়ন্ত্রন এর জন্য ব্যবহৃত ওষুধ সমূহ
(ক) ওষধের গ্রুপ: ষ্টরয়েড
মুখে: প্রেডনিসোলন (১-২মিগ্রা/কেজি),
ওরাডেক্সন
ইত্যাদি
ইনহেলার: ট্রাইএমসিনোলন, বিক্লোমিথাসন, বুডিসোনেট ইত্যাদি
ইঞ্জেক্শান: প্রেডনিসোলন, ওরাডেক্সন, হাইড্রোকর্টিসন ইত্যাদি
মনে রাখা প্রয়োজন: ইঞ্জেকশান এবং মুখে খাওয়ার ডোজে ষ্টরয়েড দীর্ঘদিন ব্যবহার ঝুকিপূর্ন।
(খ) ওষধের গ্রুপ: ক্রোমিন
ইনহেলার: সোডিয়াম ক্রোমোগ্লাইকেট ডোজ:: ১০মিগ্রা দিনে ৪বার
ইনহেলার: নিডোক্রোমিল
সোডিয়াম ডোজ:: ৪মিগ্রা দিনে ২বার
মনে রাখা প্রয়োজন: এই গ্রুপের ইঞ্জেকশান এবং মুখে খাওয়ার তৈরী নাই।
(গ) ওষধের গ্রুপ: লিউকোট্রিন
এন্টাগোনিষ্ট
মুখে: জাফিরলুকাষ্ট: ২০মিগ্রা/দিনে ২বার
মুখে: মন্টিলুকাষ্ট*: <১২বঃ ৫মিগ্রা শোবার সময়
>১২বঃ ১০মিগ্রা শোবার সময়
মনে রাখা প্রয়োজন: এই গ্রুপের ওষুধ ৪ বছরের নিচে শিশুদের
জন্য ব্যবহার নিষেধ এবং ইঞ্জেকশান বা মুখে খাওয়ার তৈরী নাই।
(ঘ) ওষধের গ্রুপ: মাষ্ট সেল সট্যাবিলাইজার
মাষ্ট সেল : একজাতীয় কোষ যা থেকে হিষ্টামিন
জাতীয় নিঃসরন হয়ে থাকে।
মুখে:
কিটোটিফেন
২.শ্বাসনালীর
সংকোচণ-শীলতা প্রতিরোধ করে প্রসারন বাড়ানো? কিভাবে সম্ভব?
এই
উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত ওষুধ সমুহ
ওষধের
গ্রুপ: বিটা-এগোনিষ্ট গ্রুপ (শ্বাসনালী প্রসারনকারী )
এইগ্রুপের মধ্যে একাধিক ওষুধ আছে তবে নিচের ২টিই বহুল ব্যবহৃত
হয়
(১) স্বল্পক্ষন স্থায়ী শ্বাসনালী প্রসারনকারী বিটা-এগোনিষ্ট: ওষধের
নামঃ সলবুটামল
(২)
দীর্ঘক্ষন স্থায়ী শ্বাসনালী
প্রসারনকারী বিটা-এগোনিষ্ট: ওষধের নামঃ সালমেট্রল
(১) স্বল্পক্ষন স্থায়ী
শ্বাসনালী প্রসারনকারী ::সলবুটামল
ইহা নেবুলাইজার ও ইনহেলারের মাধ্যমে এবং মুখে
প্রয়োগ করা যায়।
তবে মনে রাখাপ্রয়োজন ইহা মুখে খাওয়ার
ন্যুনতম
প্রয়োজনীয় ডোজে (যা নেবুলাইজার ও ইনহেলারের ডোজ
অপেক্ষা ৪০-৬০গুন বেশী) নিচে অসুবিধাগুলো হয়।
@ (ক) হৃদস্পন্দন বাড়ায়, যাতে হার্টের অক্সিজেন চাহিদা বেড়ে যায়।
@ (খ) শরীরের কাপুনি সৃষ্টি করে,
@ (গ) শিশুদের মাঝে অস্থিরতা ও সৃষ্টি হয়।
সলবুটামল বিষয়ে অন্যান্য প্রয়োজনীয়
তথ্য যা মনে রাখা প্রয়োজন,
মুখে: সিরাপ: প্রতি চামুচে ২মিগ্রা এবং প্রতি বড়িতে ২ এবং ৪ মিগ্রা
ডোজ: ০.১
মিগ্রা/কেজি দিনে ৩ বার পর্যন্ত।
ইনহেলার:: ১০০
মাইক্রোগ্রাম/পাপ
ডোজ
:: ২পাপ দিনে ৪- ৬বার এবং যখনই শ্বাসকষ্ট ও কাশীর জন্য প্রয়োজন হবে।
প্রায় প্রত্যেকটা কোম্পানির এই ওষুধের মুখে খাওয়ার প্রিপারেশান আছে।
ইনহেলার ২ ধরনের আছে। জলীয় জাতীয় (Metered Dose inhaler) এবং শুষ্ক পাউডার (Dry Powder
Inhaler)
জাতীয়। তবে বর্তমানে বাজারে ৩/৪টা
কোম্পানী জলীয় জাতীয় (Metered Dose inhaler) এবং শুষ্ক পাউডার (Dry Powder Inhaler) জাতীয় ইনহেলার বাজারজাত করেছে।
(২) দীর্ঘক্ষন স্থায়ী শ্বাসনালী
প্রসারনকারী :: সালমেট্রল
সালমেট্রাল বিষয়ে অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য যা মনে রাখা প্রয়োজন,,
ইনহেলার::২৫ মাইক্রোগ্রাম/পাপ
ডোজ :: ১-২পাপ
দিনে ২বার
ইহার মুখে খাওয়ার বা ইঞ্জেকশানের কোন
প্রিপারেশান নাই। সালমেট্রাল এককভাবে
এবং ষ্টরয়েড মাথে সংমিশ্রিতভাবে জলীয়
জাতীয় ইনহেলার (Metered Dose inhaler) এবং
শুষ্ক পাউডার ইনহেলার (Dry Powder Inhaler) জাতীয় প্রিপারেশান বাজারে পাওয়া
যায়।
ওষধের
গ্রুপ: এন্টিকোলিনার্জিক গ্রুপ (শ্বাসনালী প্রসারনকারী )
ঔষুধের নাম: ইপ্রাট্রোপিয়াম ব্রোমাইড
ইপ্রাট্রোপিয়াম ব্রোমাইড
বিষয়ে অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য যা মনে রাখা প্রয়োজন,,
ইনহেলার::৩৫ মাইক্রোগ্রাম/পাপ
ডোজ :: ১-২পাপ
দিনে ৩বার
ইহার
মুখে খাওয়ার বা ইঞ্জেকশানের কোন প্রিপারেশান নাই। ইপ্রাট্রোপিয়াম
ব্রোমাইড
এককভাবে এবং সলবুটামলের সাথে সংমিশ্রিতভাবে জলীয়
জাতীয় ইনহেলার (Metered Dose inhaler) এবং
শুষ্ক পাউডার ইনহেলার (Dry Powder Inhaler) প্রিপারেশান বাজারে পাওয়া যায়।
ওষধের গ্রুপঃ মিথাইল যেন্থিন গ্রুপ (শ্বাসনালী প্রসারনকারী )
ওষধের নামঃ এমাইনোফাইলিন;
থিওফাইলিন ৮ ঘন্টা অন্তর সেবন করার
পরামর্শ দিতে হয়, তবে বর্তমানে সাস্টেইন রিলিজ টেবলেট পাওয়া যায় যা দৈনিক ১ বার
প্রয়োগ করে সারাদিন রক্তে ঔষুধের
উপস্খিতি নিশ্চিৎ করা যায়।
ইহা মুখে ও শীরায় প্রয়োগ করা
যায় এরুপ প্রিপ্যারেশান বাজারে পাওয়া যায়।
মনে
রাখা প্রয়োজনঃ
এই গ্রুপের ঔষুধ
প্রয়োগের পুর্বে নিচের বিষয়গুলো বিবেচনায়
নেয়া উচিৎ।
০০. যথাপরিমান ডোজ প্রয়োগ না
হলে এই ঔষুধ কার্যকর হয় না
আবার যথা পরিমান মাত্রার সামান্য বেশী প্রয়োগ করা হলে তীব্র পাশ্বপতিক্রিয়া এমন কি
মৃত্যূ ও হতে পারে।
০১. এই গ্রুপের ঔষুধের অনেক
পাশ্বপতিক্রিয়া আছে যার মধ্যে ’’স্নায়ুর উত্তেজনা বৃদ্ধি’’ এবং ’’হার্টের বিটের
গতি বৃদ্ধি’’ উল্লেখ যোগ্য। এসব কারনে এই ঔষুধের প্রাপ্ত রোগীদের মধ্যে বিরাম হীন বমি, খিচুনি এবং হার্ট
ফেইলিউরের মতো অবস্থা হতে পারে,
০২. অনেক গ্রুপের ঔষুধের সাথে
এইগু্রপের ঔষুধের খারাপ আন্ত-ক্রিয়া হয়। যার মধ্যে টেট্রাসাইক্লিন গ্রুপ, কুইনোলন
গ্রুপ (সিপ্রোফ্লকক্সাসিন, স্পারফ্লকক্সাসিন, গেটিফ্লকক্সাসিন), এন্টাসিড গ্রুপ ও রেনিটিডিন গ্রুপ
উল্লেখ করার মতো।
০৩. দ্রুত বা বোলাস (৫০ মিলি
স্যালাইনের সাথে মিশিয়ে সিরিঞ্জ দিয়ে প্রয়োগ) প্রয়োগ বর্তমানে উৎসাহিত করা হয় না
যেহেতু বর্তমানে সাস্টেইন রিলিজ টেবলেট বেশী ব্যবৃত হয় এবং রোগীর রক্তে
সার্বক্ষনিক এই ঔষুধের উপস্থিতি থাকে
এবং তাতে এই ঔষুধের বিষক্রিয়া শুরু হয়ে
যেতে পারে।
০৪. হার্টে রক্তঘাটতি জনিত
কারনের (ischaemic
Heart disease) রোগ
এবং এ রোগের কারনে হার্টে অক্সিজেন ঘাটতি থাকলে এই ঔষুধ পারত পক্ষে প্রয়োগ ঠিক নয়।
শিশুদের ডোজ: ৫মিগ্রা/কেজি/দিন
অন্যদের
ডোজ: ৩০০ - ৬০০/দিন
ব্রংকিয়াল এস্থমা রোগীর অবস্থা মুল্যায়ন বা স্কোরিং
শ্বাসকষ্টের তীব্রতার
মাত্রা
|
স্কোর
|
প্রতি দিন শ্বাসকষ্ট হয়?
|
হ্যাঁ হলে:-১, না হলে:-০
|
প্রতিমাসে ২ দিনের বেশী
রাত্রীকালিন শ্বাসকষ্ট হচ্ছে?
|
হ্যাঁ হলে:- ১, না হলে:-০
|
রোগীর এমন বেশী শ্বাসকষ্ট
হয়েছে যে রোগীকে প্রায়ই
ষ্টরয়েড, নেবুলাইজার,এমাইনোফাইলিন ইন্জ
নিতে হচ্ছে বা হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে?
|
হ্যাঁ হলে:-১, না হলে:-০
|
রোগীর বিগত ৬মাস যাবৎ
স্থায়ী শ্বাসকষ্ট রয়েছে?
বা ১ বছর যাবৎ স্টরয়েড নিতে
বাধ্য হয়েছেন?
|
হ্যাঁ হলে:-৩, না হলে:-০
|
রোগীর বেস লাইন পিইএফআর
<৬০% বা কম
|
হ্যাঁ হলে:-১, না হলে:-০
|
এই
স্কেলের স্কোর অনুযায়ী আদর্শ ব্যবস্থাপনার চিকিৎসা শুরুর স্টেপ/ ধাপ সমূহ
<=৫ বছরের শিশুদের জন্য স্কে^ার অনুযায়ী সুপারিশকৃত স্টেপ বা ধাপ সমূহ
|
>৫ বছরের>রোগীদের জন্য স্কে^ার অনুযায়ী
সুপারিশকৃত স্টেপ বা ধাপ সমূহ
|
||
স্কে^ার: ০
|
স্কে^ার: ০
|
স্টেপ:-
১
|
|
স্কে^ার: ১
|
স্টেপ:-
২
|
স্কে^ার: ১
|
স্টেপ:-
২
|
স্কে^ার: ২
|
স্টেপ:-
৩
|
স্কে^ার: ২
|
স্টেপ:-
৩
|
স্কে^ার: ৩
|
স্টেপ:-
৪
|
স্কে^ার: ৩
|
স্টেপ:-
৪এ
|
স্কে^ার: ৪-৫
|
স্টেপ:-
৫এ
|
স্কে^ার: ৪
|
স্টেপ:-
৪বি
|
স্কে^ার: ৬
|
স্টেপ:-
৫বি
|
স্কে^ার: ৫-৭
|
স্টেপ:-
৫
|
মনে
রাখতে হবে
Fরোগীকে যে স্কোরে মূল্যায়ন করা হইবে
সে স্কোরের জন্য
সুপারিশকৃত স্টেপ বা ধাপ থেকে চিকিৎসা শুরু করে;
ক্রমাগত অবস্থা মূল্যায়ন
করে স্টেপ বা ধাপ নির্ধারন করে ব্যবস্থাপনা দিয়ে যেতে হবে।
হাপানীর
খারাপ লক্ষন এবং উপসর্গ গুলোকে রোগী কিভাবে মোবাবেলা করিবেন সে ব্যাপারে রোগীকে যথাযত জ্ঞান দান করা হলে অর্থাৎ নিজেকে
নিজে ব্যাবস্থাপনা দেয়ার পদ্বতি রোগীকে শিখায়ে দেয়া হলে রোগীর হঠাৎ বেশী অসুস্থ
হয়ে পড়া এবং হাসপাতালে ভর্তি হতে হওয়ার ঝুকি
কমে যায়।
শ্বাসকষ্টের
রোগীকে কখন অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে:-
তবে মনে রাখতে হবে যে,
দীর্ঘকাল স্থায়ী তীব্রতর শ্বাসকষ্টের
রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতেই হবে
যে
সকল লক্ষন এবং উপসর্গ গুলো তীব্রতর
শ্বাসকষ্টের নির্দেশ করে সে গুলো হলো
যেমন:
► নাড়ীর গতি বা পাল্স:- ১১০/মিঃ
► অনিয়মিত পাল্স
► একটি সম্পুর্ন বাক্য বলতে না পারা।
এক্ষেত্রে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে
হাপানির শ্বাসকষ্টের রোগী নিচের লক্ষনগুলো দেখা দিলে মৃত্যুর ঝৃuঁক থাকে।
► নীল হয়ে যাওয়া,
► একদম কথাই বলতে না পারা,
► নাড়ীর গতি ৬০ এর নিচে চলে আসলে,
► পরিবেশ চিনতে না পারার মতো মানসিক অবস্থা হলে বা
চৈতন্যাবস্থা কমে গেলে,
► বুকে কোন শব্দই
পাওয়া না গেলে।
৫বছর এর নিচের বয়েষী শিশুদের জন্য
অনুসরনীয়
ধাপ বা স্টেপ
|
স্টেপে কি / কি করিতে হয়
|
সাথে
|
সাথে
|
||||||
|
স্টেপ: ৫এ এর ওষুধ
সমুহ
|
স্টেপ: ১
ব্যবস্থাপনা
|
|||||||
|
অথবা মুখে: :: প্লেইন স্বাভাবিক থিওফাইলিন
(৫ মিগ্র/কেজি)
|
ইনহেলার
উচ্চডোজে স্টরয়েড
ডোজ:
৪০০-৮০০মাগ্রা
দিনে ২বার
|
স্টেপ:-১
ব্যবস্থাপনা
|
||||||
|
অপসান :-Z ইনহেলার : উচ্চডোজে স্টরয়েড
ডোজ: ৪০০-৮০০মাইক্রোগ্রাম ২বার
|
স্টেপ:-১
ব্যবস্থাপনা
|
|||||||
অপসান :-Y ইনহেলার : নিম্নডোজে
স্টরযেড
ডোজ: ২০০-৪০০মাইক্রোগ্রাম ২বার
সাথে
(+) ইনহেলার:: সালমেট্রাল,
(দীর্ঘসময় ক্রিয়াশীল শ্বাসনালী প্রসারনকারী)
ডোজ: ২৫ মাইক্রোগ্রাম/ ২বার
|
|||||||||
অপসান :-X ইনহেলার: নিম্ন
ডোজে স্টরযেড,
ডোজ: ২০০-৪০০
মাই:গ্রাম/২বার
সাথে (+) ইনহেলার :: পূর্ণ ডোজে ক্রোমোন
|
|||||||||
|
ইনহেলার: নিম্ন ডোজে স্টরযেড,
ডোজ: ২০০-৪০০ মাই:গ্রাম/২বার
|
স্টেপ:-১
ব্যবস্থাপনা
|
|||||||
ইনহেলার: পূর্ণ ডোজে ক্রোমোন
সোডিয়াম ক্রোমোগলাইকেট ডোজ::১০মিগ্রা দিনে ৪বার
নিডোক্রোমিল সোডিয়াম ডোজ:: ৪মিগ্রা দিনে ২বার
|
স্টেপ:-১
ব্যবস্থাপনা
|
||||||||
ইনহেলার :: স্বর্ল্পস্থায়ী শ্বাসনালী প্রসারনকারী
সলবুটামল,
১০০ মাইক্রোগ্রাম/পাপ
ডোজ :
২পাপ দিনে ৪- ৬বার এবং যখনই প্রয়োজন হবে।
|
|
৫বছর
এর উপরের বয়েষী রোগীদের জন্য অনুসরনীয়
স্টেপ
|
কোন
স্টেপে শুরু করিতে হবে
|
সাথে
|
সাথে
|
স্টেপ:
৫
|
মুখে কর্টিকোস্টরয়েড:
ডোজ: ২০মিগ্রা দৈনিক
|
স্টেপ: ৪বি এর ওষুধ সমুহ
|
স্টেপ: ১
ব্যবস্থাপনা
|
স্টেপ:
৪বি
|
ইনহেলার :সালমেট্রাল (দীঘস্থায়ী প্রসারনকারী ডোজ:৫০মাগ্র/২বার
সাথে (+)মুখে সাসটেইন রিলিজ থিওফাইলিন
|
ইনহেলার উচ্চডোজে স্টরয়েড
ডোজ: (মাইক্রোগ্রাম)
>৫-১৮বঃ:
৪০০-৮০০/২বার,
>১৮ বঃ: ৮০০-১২০০/২বার,
|
স্টেপ: ১
ব্যবস্থাপনা
|
স্টেপ:
৪এ
|
ইনহেলার: সালমেট্রাল (দীর্ঘসময় ক্রিয়াশীল শ্বাসনালী
প্রসারনকারী)
ডোজ:৫০/২বার সাথে স্টেপ ৩ এর ব্যবস্থাপনা।
অথবা মুখে::
সাসটেইন রিলিজ থিওফাইলিন
|
স্টেপ: ১
ব্যবস্থাপনা
|
|
স্টেপ:
৩
|
অপসান :-ZF ইনহেলার উচ্চডোজে স্টরয়েড
ডোজ:: বাচ্চা:৪০০[]
বয়স্ক:৮০০-২০০০ /২বার
|
স্টেপ: ১
ব্যবস্থাপনা
|
|
অপসান :-YF ইনহেলার নিম্ন ডোজে স্টরয়েড
ডোজ:: বাচ্চা <৪০০
এবং বয়স্ক <৮০০ /২বার
সাথে (+) F ইনহেলার: সালমেট্রাল (দীর্ঘ ক্রিয়াশীল
শ্বাসনালী প্রসারনকারী)
ডোজ: ৫০মাক্রোগ্রাম /২বার
|
|||
অপসান :-XF ইনহেলার নিম্ন
ডোজে স্টরয়েড
ডোজ:: বাচ্চা <৪০০ এবং বয়স্ক <৮০০ /২বার
সাথে (+) ইনহেলার পূর্ণ ডোজে ক্রোমোন
|
|||
স্টেপ:
২
|
অপসান :-C লিউকোট্রিন্এন্টাগোনিষ্ট
জাফিরলুকাষ্ট: ২০মিগ্রা/দিনে
মন্টিলুকাষ্ট: <১২বঃ ৫মিগ্রা শোবার
সময়
>১২বঃ
৫মিগ্রা শোবার সময়
|
স্টেপ: ১
ব্যবস্থাপনা
|
|
অপসান :-B
é নিম্ন
ডোজে স্টরয়েড ইনহেলার^ ***
৫-১৮বঃ:৪০০, >১৮বঃ :৮০০ দৈনিক
|
|||
অপসান :-A
é পূর্ণ
ডোজে ইনহেলার ক্রোমোন**
|
|||
স্টেপ:
১
|
ইনহেলার স্বল্পকাল ক্রিয়াশীল শ্বাসনালী
প্রসারনকারী
সলবুটামল, ১০০
মাইক্রোগ্রাম/পাপ
ডোজ::> ২পাপ দিনে ৪
৬বার যখনই প্রয়োজন*
|
স্টেপ: ১
ব্যবস্থাপনা
|
No comments:
Post a Comment